ঢাকা শহর তখনও জেগে ওঠেনি। কিন্তু অন্যান্য দিনের মত ঘুমিয়ে না থেকে ট্রাক ড্রাইভার বাবু ভাই সাতসকালে উঠে তৈরি হলেন বাইরে বেরোবার জন্য। কারণ আজ সকালে একটি ট্রিপ আছে ৭ টার সময়।
ফুরফুরে মেজাজে হাজারীবাগের গ্যারেজে গিয়ে ঢুকতেই তিনি হতবাক। দেখলেন তার ট্রাকটি নেই। চিন্তিত হয়ে যখন দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলেন,জানতে পারলেন তার ভাই পরিচয়ে কেউ একজন তার ট্রাকটি নিয়ে গিয়েছে কিছুক্ষন আগেই।
যদিও দাড়িয়ে ছিলেন কিন্তু তার মনে হতে লাগল যেন, পুরো পৃথিবী তার চারপাশে দুলছে! হন্তদন্ত হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করলেন ট্রাকের। চুরির খবর শুনে অন্যান্য কিছু পরিচিত আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুবান্ধবও যোগ দিল ট্রাকের অনুসন্ধানে।
ট্রাকের কোন হদিস যখন পাচ্ছেন না, তখন বন্ধুর পরামর্শে দ্রুত তিনি ট্রাকের কোম্পানিকে কল করলেন গাড়ির লোকেশন জানার আশায়। কিন্তু যেই লোকেশন জানতে পারলেন তাতে বুঝলেন, যে তার জিপিএসটি ততক্ষনে চোরেরা খুলে ফেলেছে। তারপরও ট্রাকের লাস্ট লোকেশন অনুযায়ী মিরপুর এলাকায় হন্নে হয়ে ঘুরতে লাগলেন ট্রাকের খোঁজে। ইতিমধ্যে পুলিশে খবর দেয়া হলেও রহস্যের কোন সুরাহা হচ্ছিলনা।
বাস্তবতা যখন চোরাবালির মত তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে অতলে, তখনই হঠাৎ বাবু ভাইয়ের মনে পরলো যে, তার গাড়িটি “ট্রাক লাগবে” এর সাথে রেজিস্ট্রেশন করা রয়েছে। তিনি দ্রুত ট্রাক লাগবের অফিসে যোগাযোগ করলেন।
অবস্থার গুরুত্ব বুঝে মুহূর্তেই কাজ শুরু করল “ট্রাক লাগবে” টিম। লোকেশন চেক করে বাবু ভাইকে জানানো হল তার গাড়িটি এই মুহুর্তে কাফরুল এলাকার গির্জার কাছে রয়েছে।
আশায় বুক বেধে রওয়ানা হলেন বাবু ভাই। পথে তার মোবাইল থেকে “ট্রাক লাগবে” অ্যাপে লগ ইন করলেন এবং অ্যাপে দেখানো ট্রাকের লোকেশন অনুযায়ী জায়গামত পৌছে যেন খুঁজে পেলেন তার হারান সাত রাজার ধন – তার কষ্টের টাকায় কেনা ট্রাকটি।
এরপর থেকে তার মুখে যেন হাসি আর ধরেই না! কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করতেই বলে বসলেন, “আমার উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম এই ট্রাক। আমি খুবই কৃতজ্ঞ ট্রাক লাগবের কাছে, আমার ট্রাকটি খুজে পেতে সাহায্য করায়।”
আর বাবু ভাইয়ের এমন বিপদে পাশে দাঁড়াতে পেরে “ট্রাক লাগবে” ও অত্যন্ত আনন্দিত। কারণ বিপদেইতো বন্ধুর পরিচয়!