বাংলাদেশের গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের সড়কে ওভারলোডেড বা অতিরিক্ত মালবোঝাই করা ট্রাক চলাচল এখন খুবই সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে কোরবানির ঈদের সময় এমনটা আরও বেশি দেখা গিয়ে থাকে। হাজার হাজার পশু দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শহরের হাটগুলোতে ট্রাকে করে আনা হয়। এসব ক্ষেত্রে অনেক ব্যাপারীই আরও বেশি লাভের আশায় ট্রাকের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি পশু গাদাগাদি করে ট্রাকে তোলেন।কিন্তু জানেন কি, এই অতিরিক্ত বোঝাই করা ট্রাকগুলো শুধু কোরবানির পশুর জন্যই নয়, আপনার নিজের জীবন আর রাস্তায় থাকা অন্য সবার জন্যও কতটা বিপদ ডেকে আনতে পারে? আসুন ওভারলোডেড ট্রাকের ঝুঁকিগুলো এবং এর থেকে কী কী ক্ষতি হতে পারে, আর এই বিষয়ে সচেতন হওয়া কতটা জরুরি তা জেনে নেইঃ
একটি ট্রাক যখন তার ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মাল বহন করে, তখন যেকোনো সময় ব্রেক ফেল করা, ভারসাম্য হারানো, কিংবা টায়ার ফেটে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। আর রাস্তায় এমনটা ঘটলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা অবধারিত।
অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে পশুরা নড়াচড়া করার বা ভালোভাবে দাঁড়ানোর সুযোগ পর্যন্ত পায় না। এর ফলে গরমে তাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, আহত হয়, এমনকি প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকে। এতে শুধু পশুর জীবনই ঝুঁকিতে পড়ে না বরং বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতিও হয়।
অতিরিক্ত বোঝাই করা ট্রাকের ইঞ্জিন, চাকা এবং ব্রেক সিস্টেমের উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে। এতে ট্রাক দ্রুত নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে, আর ভবিষ্যতে মেরামতের খরচও বেড়ে যায়।
বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী, অতিরিক্ত মাল পরিবহন করা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। পুলিশ চেকপোস্টে ট্রাক ধরা পড়লে জরিমানা হতে পারে, এমনকি ট্রাক ডিপোতে পাঠিয়ে দেওয়াও হতে পারে। এর ফলে কোরবানির পশু সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে না।
কোরবানির পশু কেবল একটি ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আমানত — যার যত্ন, নিরাপত্তা ও সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
এখনকার সময়ে প্রযুক্তির সাহায্যে পরিবহন ব্যবস্থা অনেক সহজ আর নিরাপদ করা সম্ভব। ট্রাক লাগবে তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এটি এমন একটি অ্যাপ, যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজে নির্ভরযোগ্য ও ভেরিফাইড ড্রাইভার এবং আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক আকারের ট্রাক বুক করতে পারবেন। অতিরিক্ত বোঝাই করা ট্রাক একটি গুরুতর সমস্যা। আপনার পশুর স্বাস্থ্য এবং জীবন বা ব্যবসার ভবিষ্যৎ আর অন্যদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের সচেতন হওয়া খুবই জরুরি। তাই, দায়িত্বশীলতার সাথে সামান্য লাভের আশায় জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদ পরিবহন পদ্ধতি বেছে নেই।