সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাক ড্রাইভারদের যা যা করনীয়

১) ট্রাক চালকদের সর্বদা ট্রাফিক আইন, গতি সীমা এবং ট্রাফিক সংকেত মেনে চলা উচিত। লেন পরিবর্তন করার সময় টার্ন সিগন্যাল ব্যবহার করা, তাদের আশেপাশের যানবাহনের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য বার বার ব্যাক ভিউ মিরর দেখা, ট্রাফিক সাইন অনুসরণ করা সহ রাস্তার চিহ্নগুলি মেনে চলার মতো যাবতীয় আইন ও বিধান মেনে চললে সড়ক দূর্ঘটনা থেকে এড়ানো সম্ভব।

২) ট্রাক চালকরা কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহণ করে অসতর্কতামূলক দুর্ঘটনা এড়াতে পারেন। প্রথমত, গাড়ি চালানোর সময় নেভিগেশন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা কমাতে চালকরা তাদের গন্তব্যের রুট এবং বিরতির সময় ও স্থান আগে থেকেই পরিকল্পনা করা উচিত। দ্বিতীয়ত, গাড়ি চালানোর সময় তাদের মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধ করে রাখা উচিত। তৃতীয়ত, গাড়ি চালানোর সময় তাদের ধূমপান, খাবার খাওয়া, ও পানিয় পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত। এই সহজ পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে, ট্রাক চালকরা তাদের রাস্তায় চলাকালীন নিরাপত্তা এবং মনোযোগ নিশ্চিত করতে পারে।

৩) ট্রাক চালকরা সামনের গাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সংঘর্ষ এড়াতে পারে। অর্থাৎ তাদের ট্রাক এবং সামনের গাড়ির মধ্যে পর্যাপ্ত জায়গা ছেড়ে দেওয়া যাতে সামনের গাড়িটি যদি হঠাৎ থেমে যায় বা গতি কমিয়ে দেয়, ট্রাক চালকের নিরাপদে থামানোর জন্য যেন যথেষ্ট সময় থাকে। উপরন্তু, ট্রাক চালকদের ট্র্যাফিক সিগন্যাল, সাইন এবং রাস্তার চিহ্নগুলো খেয়াল রাখা আবশ্যক।

৪) জিপিএস সিস্টেম, অনলাইন ম্যাপ সেবা এবং ট্র্যাকিং সফ্টওয়্যারের মতো বিভিন্ন প্রযুক্তি নির্ভর সমাধান ব্যবহার করে ট্রাক ড্রাইভাররা তাদের রুট আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে পারে। ট্রিপে বের হওয়ার আগে, তাদের ট্রাফিক, রাস্তার অবস্থা এবং বহনকৃত মালামালের ওজন সীমাবদ্ধতার মতো কারণগুলির উপর ভিত্তি করে নেওয়ার জন্য সেরা রুটগুলো নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

৫) ট্রাক চালকরা নিয়মিত তাদের যানবাহন চেক এবং রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন। ট্রিপের পূর্বেই ট্রাকের ফিটনেস সম্পর্কিত কিছু জিনিস পর্যবেক্ষন করা যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে ব্রেক, টায়ার, লাইট এবং ট্রাকের অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পরীক্ষা করা। চালকদের তেল, কুল্যান্ট এবং অন্যান্য ফ্লুইড সঠিক মাত্রায় রয়েছে তাও নিশ্চিত করা উচিত। ড্যাশবোর্ডে প্রদর্শিত এমন যেকোনো সতর্কতা বাতি বা সূচকগুলোও খেয়াল করা উচিত।

৬) ট্রাক চালকদের অবশ্যই আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে অবগত হতে হবে এবং রাস্তায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেই অনুযায়ী তাদের ড্রাইভিং সামঞ্জস্য সাথে বহন করতে হবে। আবহাওয়া বিষয়ে অবগত থাকার একটি উপায় হল ট্রিপ শুরু করার আগে নিয়মিত আবহাওয়ার পূর্বাভাস চেক করা এবং রাস্তায় চলাকালীন সময়ে আবহাওয়া পর্যবেক্ষন করে তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত নেয়া। এছাড়াও, ট্রাক ড্রাইভারদের একটি নির্ভরযোগ্য জিপিএস সিস্টেম গাড়িতে রাখা উচিত যেখানে আবহাওয়ার পূর্ভাবাস সতর্কতা এবং রিয়েল-টাইম আপডেট অন্তর্ভুক্ত থাকে।

৭) আক্রমনাত্মক ড্রাইভিং আচরণ এড়াতে ট্রাক চালকরা টেলগেটিং করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকবে। এর একটি উপায় হল সঠিকভাবে সিগন্যাল না করে এবং তাদের ব্লাইন্ড স্পট খেয়াল না করে আকস্মিক লেন পরিবর্তন না করা। রাস্তায় চলাকালীন সময়ে ট্রাক চালকদের শান্ত ও ধৈর্যশীল থাকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি রাস্তার অন্য চালকদের প্রতি আক্রমণাত্মক আচরণও এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়াও সর্বদা তাদের সিটবেল্ট পরা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আঘাত বা মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারে।

Back to top