বাংলাদেশের ট্রাক ব্যবসায়ে জিপিএস ট্র্যাকারের গুরুত্ব

 

প্রযুক্তি খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এর আবির্ভাব প্রতিটি উল্লেখযোগ্য শিল্পকে দিচ্ছে একটি নতুন রূপ। আধুনিক প্রযুক্তি যেকোনো ব্যবসার সফলতার পিছনে এক বিরাট ভূমিকা পালন করে। তেমনি ট্রাক ব্যবসার ক্ষেত্রেও, জিপিএস বা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম এক অসাধারণ প্রযুক্তি যা ট্রাকে ব্যবহার করলে ট্রাক মালিকদের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে সাহায্য করে। এভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে জিপিএস ট্র্যাকার ট্রাক মালিকদের ব্যবসার সেবার মান উন্নতিতে সাহায্য করছে। ট্রাকিং ব্যবসায় জিপিএস ট্র্যাকারের কয়েকটি প্রধান সুবিধা নীচে দেওয়া হল:

নিরাপত্তা সুবিধাঃ

মূল্যবান মালামাল বহনকারী ট্রাকের অনেক নিরাপত্তাজনিত সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যাগুলো চুরি এবং খারাপ গাড়ি চালানোর জন্য হতে পারে। একটি ট্রাক যদি সর্বদা ট্র্যাক করা হয় তবে এটি চুরি বা দুর্ঘটনা এড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু এখন জিপিএস ট্র্যাকিং এর প্রযুক্তি এতটাই উন্নতি হয়েছে যে গাড়ি দেশের যে প্রান্তেই থাকুক না কেনো মালিক ঘরে বসে ইঞ্জিন অফ করে দিতে পারবে, তেমনি লাইভ ট্র্যাকিং ফিচারের মাধ্যমে গাড়ি সর্বদা ট্র্যাক করতে পারবে। এভাবে জিপিএস ট্র্যাকার ট্রাক মালিকদের তাদের ট্রাকের নিরাপত্তা দেয় যা তাদের ব্যবসায়ের সেবার মান উন্নত করতে সাহায্য করে। 

জ্বালানী খরচ হ্রাসঃ

ট্রাক মালিকদের একটি বড় চিন্তার বিষয় হচ্ছে ফুয়েল খরচ। জ্বালানীর ব্যবহার কমানো একটি ব্যবসাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রচুর অর্থ সাশ্রয় করতে সাহায্য করে৷ জিপিএস ট্র্যাকারে ট্র্যাফিক আপডেট ও হার্ড ব্রেকিং এর মতো ফিচারসমূহ জ্বালানী খরচ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ট্রাফিক আপডেট মালিকদের সবচেয়ে কম দূরত্বের এবং দ্রুততম রুট নির্বাচনে সাহায্য করে যাতে তারা জ্বালানি খরচ কমাতে পারে। এছাড়াও ট্রাক মালিকরা জ্বালানী বাঁচাতে ট্রাক জ্যামে আটকে থাকাকালীন সময়ে ইঞ্জিন বন্ধ করতে চালকদের উৎসাহিত করতে পারেন জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহারের মাধ্যমে।

ট্রাকের ফিটনেসঃ

জিপিএস ট্র্যাকার একটি ট্রাক মালিককে তার ট্রাকগুলোর ফিটনেস পর্যবেক্ষন করে এর অবস্থা উন্নত করতে সহায়তা করে। ওভারস্পিড অ্যালার্ট এবং হার্ড ব্রেকিং অ্যালার্টের মতো ফিচারগুলো ট্রাক মালিকদের তাদের চালকদের ব্যবহারের উপর নজর রাখতে এবং নিরাপদে গাড়ি চালানোর উপর প্রশিক্ষণ দিতে পারবে। এভাবে তাদের ট্রাকের স্বাস্থ্যকে আরও ভালভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে এবং দুর্ঘটনার সংখ্যা হ্রাস করে তাদের ট্রাকের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও একটি ট্রাক ব্যবসায় দীর্ঘমেয়াদে ট্রাক রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমাতে সহায়তা করে। 

বিকল্প রুট পরিকল্পনাঃ

ট্রাক মালিকগন দ্রুততম রুট কোনটি তা পরিকল্পনা করতে প্রতিটি ডেলিভারির আগে তাদের ট্রাকে একটি জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহার করতে পারেন। জিপিএস ট্র্যাকার এ থাকা লাইভ ট্র্যাকিং, ট্রাফিক ডেটা এবং ৩০-দিনের হিস্ট্রির মতো ফিচারসমূহ ট্রাক মালিকদের প্রয়োজনীয় নানান তথ্য দিয়ে ট্রাকের রুট অপ্টিমাইজ করতে সহায়তা করতে পারে। এভাবে ট্রাক চালক এবং মালিকগন গন্তব্যের সবচেয়ে দ্রুততম রুটটি নির্ধারণ করে অনেক সময় বাঁচাতে পারে।

গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনঃ

জিপিএস ট্র্যাকার চলন্ত ট্রাকের লাইভ লোকেশন গ্রাহকদের প্রদান করতে সাহায্য করে। বর্তমানে জিপিএস প্রযুক্তির ফলশ্রুতিতে ট্রাক মালিকগন গ্রাহকদের সাথে খুব সহজে লোকেশন শেয়ার করতে পারছেন। যার ফলে গ্রাহক একটি নির্দিষ্ট ট্রিপ একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত লাইভ ট্র্যাকিং এ দেখতে পারবেন। এভাবে গ্রাহকদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করার মাধ্যমে ট্রাক মালিকগন তাদের সেবার মান উন্নত করতে পারছেন।

চালকদের দায়িত্ববোধ বৃদ্ধিঃ

জিপিএস ব্যবহার করে একটি ট্রাকের সঠিক রুট নির্ধারণ করা যেতে পারে। এছাড়াও, অন্যান্য ফিচার যেমন লাইভ স্পিড আপডেট, ওভারস্পিড এবং হার্ড ব্রেক অ্যালার্ট ভালোমানের ট্র্যাকিং ডিভাইসগুলো দিয়ে থাকে যার মাধ্যমে একজন ট্রাক মালিক সার্বক্ষনিক তার ট্রাকের অবস্থান পর্যবেক্ষন করতে পারেন। এছাড়াও এই তথ্যগুলো ব্যবহার করে ট্রাক চালকের ড্রাইভিং অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে। এভাবে ট্রাক চালক আরও দায়িত্ববান হবে যা ফলস্বরূপ তাদের যানবাহনের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে এবং এর ফলে তাদের ব্যবসায়িক সফলতা বৃদ্ধি পাবে।

জিপিএস ট্র্যাকার যেকোনো ট্রাক ব্যবসার সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আপনাকে আপনার ট্রাক সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণে এবং ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ট্রাক লাগবে এভাবেই তাৎক্ষণিক জিপিএস ট্র্যাকার সার্ভিস প্রদান করে বাংলাদেশের ট্রাক ব্যবসায়ে নিয়ে আনছে অনেক সফলতা।

Back to top